একদিনে ৭৫ লাখ মানুষকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার বিশেষ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সারা দেশের ৭৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার এই কার্যক্রম শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
এই ৭৫ লাখ টিকা বুস্টার (তৃতীয়) ও দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। দেশে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ও তুলনামূলক কম বুস্টার (তৃতীয়) ডোজ কাভারেজ বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সকাল ৯টা থেকে টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে।
এই দিন ১৮ বছরের বেশি যে কেউ দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার চার মাস পূর্ণ হলে বুস্টার ডোজ গ্রহণ করতে পারবেন। বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজার টিকা ব্যবহার হবে।
গতকাল সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, এই ক্যাম্পেইন চলাকালে দেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশাপাশি সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলাসমূহের ওয়ার্ড পর্যায়েও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। একদিনে প্রায় ৭৫ লাখ মানুষকে সুষ্ঠুভাবে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যে সারা দেশে ৬২৩টি স্থায়ী ও ১৫ হাজার ৫৫৮টি অস্থায়ী কেন্দ্রে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বুস্টার ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য উপযুক্ত প্রমাণ প্রদর্শন সাপেক্ষে (কোভিড-১৯ টিকার কার্ড বা সনদ) নিকটবর্তী টিকাদান কেন্দ্র বা দেশের যেকোনো কোডিড-১৯ টিকাদান কেন্দ্র থেকে টিকা গ্রহীতা এই বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। সব টিকাদান কেন্দ্রে ফাইজার ভ্যাকসিন প্রদানের শর্তাবলি অনুসরণ করতে হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতাল, জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট, ঢাকা ডেন্টাল কলেজসহ ১৬টি কেন্দ্রে ৮টি করে টিম ও ১১টি কেন্দ্রে ৪টি টিম কাজ করবে। এ ছাড়া দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ১০টি কেন্দ্রে ৮টি করে টিম ও ৪টি কেন্দ্রে ৪টি করে টিম কাজ করবে।
একটি টিমে ২ জন টিকাদানকারী ও ৩ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবে। প্রতিটি টিম ৫০০ জনকে টিকা প্রদান করবে। বুস্টার ডোজ দিবসের ফ্যাসিলিটিতে কেন্দ্রে নারীদের পর্দাঘেরা স্থানে পৃথকভাবে এবং বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার দিয়ে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে।
এছাড়া আজ নিয়মিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান থাকবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন বুস্টার ডোজ কার্যক্রম এক দিন পরিচালনা করতে হবে।
বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ১২ কোটি ৯৫ লাখ ২৬ হাজার মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দিয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ১১ কোটি ৯৮ লাখ ১৭ হাজার মানুষ। অর্থাৎ প্রথম ডোজ নেওয়া ৯৭ লাখ ৯ হাজার মানুষের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া বাকি আছে।
অন্যদিকে এ পর্যন্ত তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ৩ কোটি ২ লাখ ৪১ হাজার মানুষ। প্রথম ডোজ পাওয়া সবাইকে বুস্টার ডোজের আওতায় আনতে হলে এখনো প্রায় ১০ কোটি ডোজ টিকা দিতে হবে।